জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অষ্টমবারের মতো অস্থায়ী সদস্য হলো পাকিস্তান
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে পাকিস্তানসহ পাঁচটি দেশ নির্বাচিত হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করবে তারা। নতুন নির্বাচিত দেশগুলো হলো পাকিস্তান, সোমালিয়া, পানামা, গ্রিস এবং ডেনমার্ক।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও ফলাফল
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থীদের জয়লাভের জন্য কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ১২৯টি ভোট প্রয়োজন ছিল। ডেনমার্ক পেয়েছে ১৮৪ ভোট, পানামা ১৮৩ ভোট, গ্রিস ও পাকিস্তান সমান সমান ১৮২ ভোট এবং সোমালিয়া পেয়েছে ১৭৯ ভোট।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই নির্বাচনে জয়লাভকে দেশের জন্য গর্বের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় পাকিস্তানের কূটনৈতিক ভূমিকার উপরে ভরসা রেখেছে গোটা বিশ্ব।"
![]() |
ফাইল - ছবি |
নিরাপত্তা পরিষদের গঠন
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশ রয়েছে: যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং চীন। এদের প্রত্যেকের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া, দশটি অস্থায়ী সদস্য দেশ রয়েছে, যারা দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। প্রতি বছর পাঁচটি নতুন দেশ নির্বাচিত হয়ে পূর্ববর্তী পাঁচটি দেশের স্থলাভিষিক্ত হয়।
ভৌগোলিক বণ্টন
নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যদের নির্বাচন ভৌগোলিক বণ্টনের ভিত্তিতে হয়। আফ্রিকান গ্রুপের জন্য দুটি, এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের জন্য একটি, ল্যাটিন আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান গ্রুপের জন্য একটি এবং পূর্ব ইউরোপীয় গ্রুপের জন্য একটি আসন বরাদ্দ থাকে।
পাকিস্তানের পূর্ববর্তী সদস্যপদ
এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হলো পাকিস্তান। এর আগে পাকিস্তান ১৯৫২-৫৩, ১৯৬৮-৬৯, ১৯৭৬-৭৭, ১৯৮৩-৮৪, ১৯৯৩-৯৪, ২০০৩-০৪ এবং ২০১২-১৩ মেয়াদে এই দায়িত্ব পালন করেছে।
অন্যান্য নির্বাচিত দেশ
সোমালিয়া দ্বিতীয়বারের মতো, পানামা ষষ্ঠবারের মতো, ডেনমার্ক পঞ্চমবারের মতো এবং গ্রিস তৃতীয়বারের মতো নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আশা প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংকট মোকাবেলায় তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমালোচনা ও বিতর্ক
পাকিস্তানের নির্বাচনে কিছু বিতর্কও রয়েছে। কিছু সমালোচক মনে করেন, দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগের কারণে পাকিস্তানের এই সদস্যপদ প্রাপ্তি প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তবে পাকিস্তান সরকার এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন :
পাকিস্তান চিনের কাছে পঞ্চম প্রজন্মে যুদ্ধবিমান কিনতে চলেছে।'ঘুরপথে' ভারতকে কি সতর্ক করছে বাংলাদেশ
উপসংহার
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে পাকিস্তানের পুনরায় নির্বাচন আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে দেশের সক্রিয়তা ও গুরুত্বের প্রতিফলন। আগামী দুই বছরে পাকিস্তান এই মঞ্চে কীভাবে তার ভূমিকা পালন করবে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে থাকবে।
বিশেষ সুত্র থেকে নেওয়া : (Daily Inqilab,Protidin,Juganta, Etc)
![]() |
BREAKING NEWS TODAY'S |
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ