এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ডের মজুরিসীমা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্র।
এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ডের মজুরিসীমা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্র। এতে বেসরকারি সংস্থার আরও বেশি সংখ্যক কর্মীকে পেনশনের আওতায় আনা যাবে বলে যুক্তি দিয়েছে সরকার।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) নিয়মে বড় বদল আনতে চলেছে কেন্দ্র। বেসরকারি সংস্থায় চাকরিজীবীদের উপর পড়বে তার প্রভাব। সূত্রের খবর, এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) মজুরিসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
ইপিএফ নিয়ন্ত্রণ করে এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও। এটি কেন্দ্রের শ্রম মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি সংস্থা। বর্তমানে ইপিএফও-র নিয়ম অনুযায়ী বেসরকারি সংস্থার কোনও কর্মীর মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে হয়।
সূত্রের খবর : আগামী দিনে এই নিয়মের বদল ঘটাতে চাইছে কেন্দ্র। পিএফের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের। যদিও এই নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।ইপিএফও-র নিয়মে বলা আছে, বেসরকারি সংস্থার এক জন চাকরিজীবীর মূল বেতনের (বেসিক পে) ১২ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য কেটে নিতে হবে।
Employes Provident Fund |
সেই টাকা কিন্তু ইপিএফও-র তহবিলে জমা পড়বে। এবং সম পরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা করবে ওই ব্যক্তির নিয়োগকারী সংস্থাও।ইপিএফও-র তহবিলের দু’টি অংশ রয়েছে। একটি হল, এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ)। অপরটির নাম, এমপ্লয়িজ় পেনশন স্কিম (ইপিএস)।
বেসরকারি সংস্থার কর্মীর বেতনের যে অংশটি কেটে নেওয়া হয়, তার পুরোটাই জমা হয় ইপিএফ তহবিলে।অন্য দিকে, নিয়োগকারী সংস্থা যে টাকা জমা করবে, তার ৮.৩৩ শতাংশ পেনশন অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। বাকি ৩.৬৭ শতাংশ চলে যায় প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে। ইপিএফের উপর বছরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ দিয়ে থাকে কেন্দ্র। 2023-2024 অর্থবর্ষে এর পরিমাণ ৮.২৫ শতাংশ রেখেছে সরকার।ইপিএফের এই সুদের হার পরিবর্তনশীল। 2021-’2022 অর্থিক বছরে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার ছিল ৮.৫ শতাংশ। ঠিক তার পরের বছর (পড়ুন 2022-2023) এই হার আরও কমে ৮.১ শতাংশে নেমে এসেছিল।
তা চলতি আর্থিক বছরে ফের কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।পেনশন তহবিলে আবার ইচ্ছামতো টাকা জমা করতে পারা যায় না। এ ক্ষেত্রে একটি ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্র। সেই নিয়মে বলা হয়েছে এক জন কর্মীর ইপিএস (EPF) অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ মাসিক ১,২৫০ টাকা জমা করা যাবে। ইপিএসের টাকা অবসরের আগে কোনও ভাবেই তোলা যাবে না।প্রভিডেন্ট ফান্ডে সঞ্চিত অর্থ কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীর তোলার অধিকার রয়েছে। এই তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুলে নিতে পারেন তিনি। আবার ইচ্ছা করলে অবসরের পরেও এই তহবিল থেকে টাকা পেতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্মী।কেন্দ্রের দাবি -- মজুরি সীমা ২১ হাজার টাকা মধ্যে বেসরকারি সংস্থার অধিকাংশ কর্মীকে পেনশন তহবিলের আওতায় আনা যাবে। এখনকার আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেলে তিনি পেনশন তহবিলে অর্থ জমা করতে পারবেন না।
তাঁর বেতন থেকে যে টাকা কাটা হবে, তার পুরোটাই যাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে।কিন্তু, মজুরি সীমা বাড়িয়ে ২১ হাজার করলে ১৫ হাজার টাকা বা তার বেশি বেসিক পে হলেও বেসরকারি সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মী পেনশন ফান্ডে টাকা জমাতে পারবেন। মূল বেতন ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন তিনি।সূত্রের খবর, মজুরি সীমা বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করা হলে পেনশন তহবিলে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সে ক্ষেত্রে ১,২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ওই অঙ্ক পৌঁছাবে ১,৭৪৯ টাকা। অন্য দিকে প্রভিডেন্ট ফান্ডে কমবে বিনিয়োগের পরিমাণ।১৯৫২ সালে ‘এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড মিসলেনিয়াস প্রভিশন অ্যাক্ট’-এর আওতায় বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের জন্য পিএফ চালু করে কেন্দ্র।
অতীতে মাত্র আট বার এর নিয়ম বদলেছে সরকার।১৯৫২ সালে প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য মজুরিসীমা ছিল মাত্র ৩০০ টাকা। এর পর বাড়তে বাড়তে ২০০১ সালে তা সাড়ে ছ’হাজার টাকা করা হয়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিমাণ একলাফে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। টাকার অঙ্ক দাঁড়ায় ১৫ হাজার।এর পর কেটে গিয়েছে আরও ১০ বছর। বর্তমানে পেট্রল-ডিজ়েল থেকে রান্নার গ্যাস নিত্য-প্রোয়জনের জিনিসের দ্রব্যমূল্য খাদ্য কিংবা বস্ত্র সব কিছুরই দাম বেড়েছে। সেটা নজরে রেখেই এ বার চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) সংক্রান্ত নিয়ম বদলের ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্র।
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ