বর্ধমান পৌরসভা থেকে গায়েব প্রায় দেড় কোটি টাকা
পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান শহর বর্ধমানের পৌরসভা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অনিয়মের মাধ্যমে সরানো হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই রাজ্যের প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
কীভাবে ঘটল এই আর্থিক কেলেঙ্কারি?
সূত্রের খবর, বর্ধমান পৌরসভার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ ব্যবস্থাপনায় বড়সড় গড়মিল লক্ষ্য করা যায়। সাম্প্রতিক অডিট রিপোর্টে দেখা যায়, একাধিক ক্ষেত্রে খরচের হিসাবে গরমিল রয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, দুর্নীতির মাধ্যমে এই অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে এবং এর সঙ্গে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন।
একজন পৌরসভা কর্মকর্তা জানান, "আমাদের নজরে এসেছে যে বেশ কয়েকটি ফান্ড থেকে টাকা তোলা হলেও সেই অর্থের কোনো সঠিক ব্যবহার বা প্রমাণ নেই। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তদন্ত চলছে।"
তদন্ত শুরু, প্রশাসনের কড়া নজর
এই ঘটনার পরই রাজ্য সরকারের তরফে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন পৌরসভার কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জানা গেছে, পৌরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের খরচের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজন হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন,
"বর্ধমান পৌরসভার আর্থিক লেনদেনের সমস্ত নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনোভাবেই দুর্নীতিকে বরদাস্ত করা হবে না।"
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও নাগরিকদের উদ্বেগ
এই ঘটনার পরই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি চলছিল, কিন্তু সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। বর্ধমানের সাধারণ নাগরিকরাও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই পৌরসভার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "
আমরা নিয়মিত পৌরসভায় কর দিচ্ছি, অথচ আমাদের টাকার এই দুরবস্থা! যারা এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।"
অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গায়েব হয়ে যাওয়া অর্থ কীভাবে এবং কোথায় সরানো হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে কোনো অর্থ সরানো হয়েছে কিনা, তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এই দুর্নীতির ঘটনায় বর্ধমান পৌরসভা এখন কড়া নজরদারির মধ্যে রয়েছে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। তবে এই ঘটনা ভবিষ্যতে পৌরসভার আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আরও স্বচ্ছতা আনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
বর্ধমান পৌরসভা থেকে গায়েব প্রায় দেড় কোটি টাকা, তদন্তে প্রশাসন
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ