ভারতের চিন্তা বাড়িয়ে ৬০০ ট্যাঙ্ক কিনছে পাকিস্তান
প্রতিরক্ষাবাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজ শুরু করে দিল পাকিস্তান। তার জন্য আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের উপযোগী প্রায় ৬০০টি ট্যাঙ্ক কেনার তাদের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই ৬০০টি ট্যাঙ্কের মধ্যে রয়েছে রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি টি-৯০ ট্যাঙ্কও। জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় সেগুলিকে মোতায়েন করার চিন্তাভাবনা করছে তারা। সংবাদসংস্থা পিটিআই এমনই তথ্য দিয়েছে।
| এই রুশ টি-৯০ ট্যাঙ্কই কিনতে চায় পাকিস্তান। ছবি: ফাইল চিত্র। |
জানা গিয়েছে, পাকিস্তান যে ধরনের ট্যাঙ্কার কেনার পরিকল্পনা করছে, তাতে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হামলার প্রযুক্তি থাকবে। লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকবে না। বরং এক ক্লিকেই ৩ থেকে ৪ কিলোমিটারের মধ্যে নিশানায় আঘাত হানা যাবে। ৬০০টি ট্যাঙ্কের মধ্যে কিছু মোতায়েন থাকবে জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায়। সেগুলি আরও উন্নত ধরনের হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারোপযোগী সবরকম সরঞ্জাম থাকবে। শুধুমাত্র ট্যাঙ্কই নয়, ইতালি থেকে ২৪৫টি ১৫০ মিলিমিটারের এসপি মাইক-১০ বন্দুক কিনছে পাকিস্তান। যার মধ্যে ১৫০টি ইতিমধ্যে তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রীতিমতো পরিকল্পনা করেই রাশিয়ার থেকে ৬০০টি টি-৯০ ট্যাঙ্ক কিনতে চলেছে পাকিস্তান। কারণ প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পুরোপুরি ক্রেমলিনের উপর নির্ভরশীল ছিল ভারত। কিন্তু সম্প্রতি ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকেছে দিল্লি। ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি কপ্টার কেনা নিয়ে কথা চলছে আমেরিকার সঙ্গে। যার জেরে রাশিয়ার সঙ্গে কিছুটা হলেও দূরত্ব বেড়েছে। আর এই দূরত্বকেই কাজে লাগাতে উঠে পড়ে লেগেছে ইসলামাবাদ। রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সশস্ত্রবাহিনীকে ঢেলে সাজিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি, দেশের প্রযুক্তি ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো লক্ষ্য তাদের। যে কারণে ৩৬০টি ট্যাঙ্ক বিদেশ থেকে কিনলেও, ২২০টি নিজেদের দেশেই বানাবে তারা, তাও আবার চিনের প্রযুক্তিগত সহায়তায়।
তাদের এই উদ্যোগই দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের। বিশেষ করে গত এক বছরে জম্মু-কাশ্মীরেনিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের তরফে নৃশংসতা যখন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিনা প্ররোচনায় সেখানে লাগাতার অস্ত্রবিরতি চুক্তিল লঙ্ঘন করে আসছে পাক সেনা। পাল্টা গুলি চালিয়ে কোনওরকমে তাদের ঠেকিয়ে রাখছে ভারতীয় বাহিনী। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী যেখানে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে ব্যস্ত, সেখানে নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি করে চলেছে পাকিস্তান। শক্তিশালী করে তুলছে ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারকেও।
ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, পদাতিক ও সশস্ত্র বাহিনীর অধুনিকীকরণের প্রস্তাব রূপায়ণের কাজ ধীরগতিতে এগোচ্ছে। প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র এমনকি অত্যাধুনিক সরঞ্জাম বাবদ ৬০ হাজার কোটির প্রকল্পও মাঝপথে আটকে গিয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে ভারতের হাতে যুদ্ধের উপযোগী টি-৯০, টি-৭২ এবং অর্জুন ট্যাঙ্ক রয়েছে, যা পাকিস্তানকে কাবু করার পক্ষে যথেষ্ট, কিন্তু ইসলামাবাদের এই তৎপরতা উদ্বেগজনক।কারণ শুধুমাত্র টি-৯০ ট্যাঙ্ক-ই নয়, চিনের থেকে ভিটি-৪ ট্যাঙ্ক, ইউক্রেনের থেকে অপলোড-পি ট্যাঙ্ক কেনার প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানের। সেগুলির সফল পরীক্ষাও ইতিমধ্যে সেরে ফেলেছে সে দেশের সেনা।
ভারতের চিন্তা বাড়িয়ে ৬০০ ট্যাঙ্ক কিনছে পাকিস্তান
অন্য দিকে, এই মুহূর্তে ভারতীয় সেনায় সশস্ত্র বাহিনীর সংখ্যা ৬৭। পাকিস্তানের রয়েছে ৫১টি। কিন্তু তাদের হাতে যে ট্যাঙ্কগুলি রয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ রাতের অন্ধকারেও পরিচালনা করা সহজ। এ ছাড়াও তাদের হাতে রয়েছে চিনের টি-৫৯ এবং টি-৬৯ ট্যাঙ্কের ১৭টি ইউনিট, যা তাদের মোট ট্যাঙ্কের ৩০ শতাংশ। আল-জারার ট্যাঙ্কের ১২টি রেজিমেন্ট মোট ট্যাঙ্কের ২০ শতাংশ এবং ইউক্রেনের টি-৮০-ইউডি এবং টি-৫৯-এর নতুন সংস্করণ মোট ট্যাঙ্কের ৫০ শতাংশ দখল করে নিয়েছে। লাদাখে যদিও আলাদাভাবে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে ভারত, তবে যুদ্ধপরিস্থিতি হাজির হলে তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি সেনাবাহিনীর।
![]() |
| BREAKING NEWS TODAY'S |
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.

0 মন্তব্যসমূহ