প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা মানবতার অবমাননা
ইসরায়েলি হামলার কঠোর নিন্দা প্রিয়াঙ্কার
ভারতের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র সম্প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন। গাজার সাম্প্রতিক হামলাকে ‘ঠান্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, "এই হত্যাযজ্ঞ প্রমাণ করে যে মানবতা তাদের কাছে কোনো মূল্য বহন করে না।"
তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমা হামলায় ৪০০ নিরীহ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ১৩০ জন শিশু ছিল। তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং বলেন, "ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যা দেখিয়ে দিচ্ছে, ইসরায়েলি নেতৃত্বের কাছে মানবিক মূল্যবোধের কোনো স্থান নেই।"
গাজায় ইসরায়েলের হামলা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিনে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নতুন মোড় নিয়েছে সাম্প্রতিক হামলার পর। গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় শত শত মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে এবং যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কংগ্রেসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেত্রী হিসেবে এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন এবং ভারতের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, "পশ্চিমা শক্তিগুলো চুপ থাকতে পারে, কিন্তু বিশ্ববাসী স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা।"
ভারতে রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি
প্রিয়াঙ্কার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি নেতারা তার এই অবস্থানকে মুসলিম তোষণ বলে দাবি করেছেন, অন্যদিকে কংগ্রেস সমর্থকরা এটিকে মানবাধিকারের পক্ষে জোরালো অবস্থান বলে অভিহিত করেছেন।
প্রিয়াঙ্কার অবস্থান: ন্যায়বিচারের পক্ষে কংগ্রেসের আওয়াজ
সংসদে ফিলিস্তিনের সমর্থনে প্রতীকী প্রতিবাদ
এর আগে সংসদ অধিবেশনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ‘প্যালেস্টাইন’ লেখা একটি ব্যাগ বহন করেছিলেন, যেখানে তরমুজের প্রতীক ছিল—যা ফিলিস্তিনি সংহতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত। এই ব্যাগ বহন করায় তিনি ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েন। বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, "গান্ধী পরিবারের এই তোষণের রাজনীতি তাদের বারবার পরাজিত করছে।"
![]() |
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সংসদে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বক্তব্য দিচ্ছেন। |
তবে প্রিয়াঙ্কা পাল্টা জবাবে বলেন, "আমার পোশাক কী হবে, তা বিজেপি ঠিক করে দেবে না। এটি নারীদের প্রতি একটি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ।"
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপি মুখপাত্র অমিত মালব্য কংগ্রেসের এই অবস্থানকে ‘মুসলিম তোষণ’ বলে কটাক্ষ করেন এবং বলেন, "কংগ্রেস এখন নতুন মুসলিম লীগ হয়ে উঠেছে।"
অন্যদিকে, কংগ্রেসের অন্য নেতারা বলছেন, "মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে কথা বলা যদি তোষণ হয়, তবে কংগ্রেস সেই তোষণের রাজনীতিতেই বিশ্বাস করে।"
একটা কথা বলে রাখা ভাল বিজেপির বলবেই না বা কেনো !
এদের মানবতার বলে কিছু নেই ৷
ধর্মের নামে রাজনৈতিক ছাড়া কিছুই বুঝে না৷
জাতির জনক কে যারা হত্যা করতে পারে তারা সব পারবে ৷ নোংরা রাজনৈতিক করায় বিজেপির ধর্ম ৷
বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা
মোদি সরকারের নীরবতা
ভারত সরকার এই সংঘাত নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি দেননি। তবে ভারত সরকার বরাবরই ইসরায়েলের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে ভারতের ঐতিহ্যবাহী অবস্থান
স্বাধীনতার পর থেকে ভারত ঐতিহ্যগতভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। ১৯৭৪ সালে ভারত ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ইস্যুতে ভারতের ঐতিহ্যবাহী অবস্থানের দিকেই ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎ: সংঘাত নাকি শান্তি?
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ
জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা গাজায় সংঘটিত এই হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছে। তবে পশ্চিমা শক্তিগুলো এখনো ইসরায়েলকে সরাসরি দোষারোপ করেনি।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গে গরম কমবে, কালবৈশাখীর আশঙ্কা! আবহাওয়া দফতরের বিশেষ পূর্বাভাস
ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধ
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তার বক্তব্যে বলেন, "ইসরায়েল যত বেশি দমন-পীড়ন চালায়, তত বেশি ফিলিস্তিনিরা সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।"
উপসংহার
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এই মন্তব্য ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। একদিকে বিজেপি তার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করছে, অন্যদিকে কংগ্রেস এটিকে মানবাধিকারের পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান বলে দেখাচ্ছে।
ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে, এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের এই সংঘাত বন্ধে কার্যকর ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। ভারতের মতো শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ যদি নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখে, তাহলে এই সংঘাতের সমাধান কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
প্রিয়াঙ্কার কণ্ঠস্বর কি শুধুই রাজনৈতিক বিবৃতি, নাকি এটি ভারতের পররাষ্ট্র নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনতে পারে? এটি সময়ই বলে দেবে।
বিস্তারিত পড়ুনঃ Time Of India
আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন! পাশে থাকুন ৷ Breaking News Todays
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ