১৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ ধর্মঘট: রাজনৈতিক উত্তেজনার নতুন মোড়
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, কারণ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ দল আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তাদের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ। অন্যদিকে, ইউনূস সরকার এই ধর্মঘটকে 'অবৈধ' আখ্যা দিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
![]() |
বাংলাদেশে ১৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের - প্রতিকী চিত্র |
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। কর্মসূচির সময়সূচি নিম্নরূপ:
- ১ ফেব্রুয়ারি: লিফলেট ও প্রচারপত্র বিতরণ
- ৬ ফেব্রুয়ারি: প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ
- ১০ ফেব্রুয়ারি: বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
- ১৬ ফেব্রুয়ারি: অবরোধ কর্মসূচি
- ১৭ ফেব্রুয়ারি: সারা দেশে মশাল মিছিল
- ১৮ ফেব্রুয়ারি: সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল
এই কর্মসূচির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের মতে, বর্তমান সরকার অনির্বাচিত ও অবৈধ, যা দেশের অশান্তির মূল কারণ।
আর ও খবর পড়ুনঃ বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ, দায়ী শেখ হাসিনার সরকার: জাতিসংঘ
ইউনূস সরকারের প্রতিক্রিয়া
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে জানান, আওয়ামী লীগের পতাকার নিচে কেউ অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস দেখালে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি আরও বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো ন্যায্য বিক্ষোভ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। আমরা সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।" তবে আওয়ামী লীগ তাদের বর্তমান নেতৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে নিজেকে আলাদা না করা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল। শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, এবং তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা চলছে। অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, মন্দিরে ভাঙচুর, সাহিত্যিক, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা বেড়েছে, যা নিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সম্ভাব্য প্রভাব
আওয়ামী লীগের এই ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ইউনূস সরকারের কঠোর অবস্থান এবং আওয়ামী লীগের দৃঢ় মনোভাবের ফলে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। দেশের সাধারণ জনগণ এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন, কারণ রাজনৈতিক অস্থিরতা তাদের দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সুত্র : বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে নেওয়া।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ ও অনিশ্চিত। আওয়ামী লীগের ঘোষিত ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং ইউনূস সরকারের কঠোর প্রতিক্রিয়া দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে প্রভাবিত করতে পারে। সাধারণ জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রত্যাশা করছে, যাতে দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অব্যাহত থাকে।
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ