মিথ্যে বলার কারণে ভারতের মুখে পড়বে একদিন চুনকালি দাবি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
একদিকে যখন ভারতের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারপক্ষের বিবৃতির দাবি জোরালো হচ্ছে - ঠিক তখনই ভারত বিরোধী সুর জোরালো করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশের বুকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়া দিল্লি । সব নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়া বাংলাদেশ কেনো যে কোন দেশেরই প্রশাসনের কর্তব্য ৷ সে কথাও স্মরণ করিয়েছে নয়া দিল্লি। ভারতের সেই অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গির আলম চৌধুরীর বক্তব্য, ভারত বাগযুদ্ধ করে যাচ্ছে আমরা সত্য ঘটনা প্রকাশ্যে এনেই এর প্রতিবাদ করে যাব। মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য এক সময়ে ভারতের মুখেই চুনকালি পড়বে। ভারতীয় মিডিয়া (ঐখানকার গদি মিডিয়া নামে পরিচিত) বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়াই এমন কাজ করতে পারে। কিন্তু বিশ্ব মিডিয়া এ সব মিথ্যে বিশ্বাস করবে না ।
![]() |
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার উপদেষ্টা ইউনুস ৷ |
মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য এক সময়ে ভারতের মুখেই চুনকালি পড়বে। ভারতীয় মিডিয়া
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন জাহাঙ্গির। সেখানে তাঁর দাবি - ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে কোনও উত্তেজনা নেই। সীমান্ত পরিস্থিতি আগেই মতোই স্বাভাবিক আছে । কয়েক দিন আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন - বাংলাদেশে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী দল পাঠানো উচিত - এ ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপও চেয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই প্রসঙ্গ তুলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কটাক্ষ - ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। সেই জন্য উনি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বোধহয় ওনার নিজের দেশে শান্তিরক্ষী চাইতে গিয়ে ভুলবশত বাংলাদেশ বলে ফেলেছেন ৷ জাহাঙ্গিরের দাবি ০৫.০৮.২০২৪ (হাসিনার দেশত্যাগের দিন) পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার থেকে অবস্থা এখন অনেক ভালো ।
তবে এখনও বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের খবর আসছে। সুনামগঞ্জ ও পঞ্চগড়ে একাধিক হিন্দু ধর্মস্থানে হামলা চলেছে বলে সূত্রের খবর। কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হিন্দু অধ্যাপক শাহবাগে মৌলবাদীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও খবর। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ প্রশ্নে উত্তপ্ত ভারতের শীতকালীন সংসদীয় অধিবেশনও। সেখানে চিন সীমান্তের সেনা প্রত্যাহার নিয়ে বিবৃতি দিলেও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন প্রসঙ্গে একটি মন্তব্যও করেননি দেশের বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিদেশমন্ত্রীর চুপ করে থাকা কে কটাক্ষ করেই সংসদে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল।
আরও খবর :
বাংলাদেশে মার খাচ্ছে সংখ্যালঘুরা , ভিসার নিয়ম সহজ করে পাকিস্তানিদের জন্য দ্বার খুলছেন ইউনুস সরকার ।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার সাথে সাথে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পার্লামেন্টে বিবৃতি দিতে হবে বিদেশমন্ত্রীকে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে লাগাতার অত্যাচার হচ্ছে৷ অবিলম্বে তা বন্ধ হওয়া উচিত। ভারত সরকারের তরফে এই মর্মে যত তাড়াতাড়ি সম্ভাব পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের বিদেশসচিব বাংলাদেশে গিয়ে ওদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বন্ধের দাবি তুলতে পারেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারত সরকারের অবস্থান জানার জন্য আমরা লোকসভায় অত্যন্ত উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি। বিজেপির সাংসদরাও এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জানতে চাইছেন।
ভারতে যা কিছু বলছে ভারতের গদি মিডিয়া আগুনে ঘি ঢালেছে ৷ ভারতের প্রধান মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিদেশমন্ত্রী একটা এখনো পর্যন্ত সরকারি ভাবে প্রেস করেন নাই ৷
বাংলাদেশ প্রশ্নে মোদী সরকার চুপ থাকলেও বিজেপি নেতারা কিন্তু বাংলাদেশকে হাতিয়ার করতে শুরু করেছেন। গিরিরাজ সিংয়ের পর এ বার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতির তুলনা টানলেন। শাহি জামা মসজিদের নীচে মন্দিরের অস্তিত্ব খোঁজার সমীক্ষা ঘিরে কিছুদিন আগেই উত্তপ্ত হয়েছিল যোগী–রাজ্যের সম্ভল। সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল চার জনের। সেই প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার অযোধ্যার রামায়ণ মেলায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী বলেন, পাচঁশো বছর আগে মোগল সম্রাট বাবরের লোকেরা অযোধ্যার কুম্ভে কী করেছিল ? মনে আছে ?
একই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে হয়েছে। বাংলাদেশেও একই জিনিস ঘটছে। তিনটি ঘটনার প্রকৃতি ও ডিএনএ একই। আপনারা যদি ভাবেন শুধু বাংলাদেশেই অশান্তি ছড়াচ্ছে তা হলে ভুল ভাবছেন। একই বিভেদকামী শক্তি এখানেও সক্রিয় সমাজের মূল কাঠামো ধ্বংস করে দিতে চায় তারা।
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ